রাজ্যের অসংখ্য সরকারি কর্মচারীদের (Govt Employees) জন্য এসে গেল বড়ো সুখবর। এবার বাড়তে চলেছে সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন (Salary Hike). পাশাপাশি, সপ্তম পে কমিশনের (7th Pay Commission) অধীনে ডিএ সংক্রান্ত বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মূলত লোকসভা নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) একধাক্কায় ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছিলেন।
7th Pay Commission Dearness Allowance Salary Hike Govt Employees Benefits.
অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করে দিয়েছিলেন। তবে এবার রাজ্যের কর্মীদের জন্য এসে গেল বড়ো খবর। অবশেষে রাজ্যে বেতন ব্যবস্থায় সপ্তম বেতন কমিশন চালু হতে চলেছে। তবে, এই সুখবর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের (West Bengal Government Employees) জন্য নয় বরং এটি কর্ণাটকের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য।
সপ্তম বেতন কমিশন লাগু!
বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই নয়া বেতন কমিশনের অন্তর্গত বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে কর্ণাটকের সরকারি কর্মচারীরা। সম্প্রতি কর্ণাটক সরকারের প্রথম মন্ত্রী সভার বৈঠক হয় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বে। কিন্তু সেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন (Pay Commission) কার্যকর করার দাবির বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি সরকারের তরফ থেকে।
সরকারি কর্মীদের অপেক্ষার অবসান
এই আবহে এবার সরকারি কর্মীদের প্রতিনিধি দল গিয়ে দেখা করল রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরের (Finance Department) আধিকারিকদের সঙ্গে। উল্লেখ্য, রাজ্যের সপ্তম বেতন কমিশনের রিপোর্ট ১৬ মার্চ জমা পড়েছিল রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কাছে। সেখানে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন ২৭.৫ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল।
DA নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ
এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। বর্তমানে সেই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশন (6th Pay Commission) অনুযায়ী মাইনে পেয়ে থাকেন। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, কর্ণাটকের রাজ্য সরকারি কর্মীদের ন্যূনতম মূল বেতন ১৭ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭ হাজার টাকা করা উচিত অর্থাৎ একধাক্কায় বেতন বৃদ্ধি হতে চলেছে।
সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি
উল্লেখ্য, নয়া বেতন কমিশনের আওতায় মাইনে বাড়ানোর দাবিতে বেশ কয়েক মাস ধরেই সরব হয়েছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। এই নিয়ে সরকার প্রাথমিক ভাবে পদক্ষেপ করলেও ভোটের আগে তা নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়। তবে ভোট মিটলেও এখনও এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার। সূত্রের খবর, সরকারী কর্মচারীদের দাবি তাঁদের মূল বেতন ২৭.৫ শতাংশ বাড়াতে হবে।
একধাক্কায় ২৭% বেতন বৃদ্ধি
তবে সরকারী কর্মীদের এই সুপারিশ প্রসঙ্গে প্রথম দিকে রাজ্য সরকার তাঁদের আশ্বাস দেয় যে ভোট পর্ব মিটলে সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু এতদিন আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি শিথিল হওয়ায় সেই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সরকার। তবে গত ১২ জুন পর্যন্ত বলবৎ ছিল এই আদর্শ আচরণবিধি। কিন্তু এখনও কোনও ইতিবাচক সরকারী নোটিশ পাননি সরকারি কর্মীরা।
সম্প্রতি কর্ণাটকের উপ মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার আরও একটি আশ্বাস দিলেন। গত ১৫ জুন ডিকে শিবকুমার ব্যাঙ্গালোর টাউন হলে কর্ণাটক রাজ্য সরকারী কর্মচারী সমিতি দ্বারা আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে ব্যাঙ্গালোর শহর, রামনগর এবং ব্যাঙ্গালোর গ্রামীণ জেলার রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের সন্তানদের পুরষ্কার বিতরণের অনুষ্ঠান ছিল। আর সেই অনুষ্ঠানে বড় বক্তব্য রাখেন শিবকুমার।
এদিকে কর্ণাটক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে কোনও ইতিবাচক খবর পাননি সরকারি কর্মীরা। জানা গিয়েছে এই মুহূর্তে রাজ্যের সরকারী কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় রয়েছে। কিন্তু রিপোর্ট অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছিল, সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন ২৭.৫ শতাংশ বাড়ানো হোক।
রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন অন্তত ১৭,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭,০০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এই সবের মাঝেই চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে রাজ্য সরকার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন খাতে ১৫৪৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে অর্থাৎ চলতি অর্থবর্ষের থেকে ২৪ শতাংশ বরাদ্দ বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। গত অর্থবর্ষে এই খাতে অর্থ বরাদ্দ ছিল ৬৫ হাজার কোটি টাকার মতো।
প্রতিমাসে 300 ইউনিট বিদ্যুৎ ফ্রি! PM Surya Ghar Yojana কিভাবে আবেদন করবেন?
তবে এই বছরে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন খাতে বরাদ্দ ২৪ শতাংশ বাড়ানো হয়। এদিকে আগেই জানানো হয়, রাজ্যে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে সরকারের কোষাগারে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা বোঝা পড়তে পারে। এমতাবস্থায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি সরকারের তরফে কতটা রাখা হয় সেটাই দেখার বিষয়।Written by Sampriti Bose.