স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi) সকল রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তরফে ৩০ শে ডিসেম্বর ২০১৬ সালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আর এই প্রকল্পের মাধ্যমে সকল নাগরিকদের ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে রাজ্যের সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়া ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে ততই এই কার্ড নিয়ে অনেক ধরণের অভিযোগ এসেছে সকল নাগরিকদের তরফে থেকে। আর এই জন্যই এবারে নড়ে চরে বসেছে রাজ্য সরকার।
Big Update For Swasthya Sathi Card Holders.
এখন থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi) থাকলেও বেসরকারি হাসপাতালে হাড়ের অস্ত্রোপচার এর ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করলেন স্বাস্থ্যসাথী পর্ষদের আধিকারিকরা। তবে পথ দুর্ঘটনায় আহতদের হাড়ের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা কার্যকরী হবে না বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসাথী পর্ষদের আধিকারিকরা। বর্তমানে আপতকালীন পরিস্থিতি অর্থাৎ কোনও দুর্ঘটনার পর জরুরি অস্ত্রপোচার আগের মতই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সাহায্যে করা গেলেও পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার।
আগে থেকে পরিকল্পনা করে হাড়ের কোনও অপারেশন বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে (Swasthya Sathi Scheme) আর করা যাবে না। স্বাস্থ্যসাথী পর্ষদের আধিকারিকরা যাবতীয় রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখেন, অর্থোপেডিক অস্ত্রোপচার নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিপুল অনিয়ম চলছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম গুলিতে পরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi) ব্যবহার করে অর্থপেডিক অস্ত্রোপচারের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।
তাই, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে (Swasthya Sathi) অর্থোপেডিক সার্জারি নিয়ে এবার কড়াকড়ির পথে হাঁটল স্বাস্থ্য ভবন। পাশাপাশি বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে অর্থোপেডিক চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকলে তবেই বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে অস্ত্রোপচারের জন্য রেফার করা যাবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে সেই রেফারেল সার্টিফিকেট নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হবে।
মূলত বিগত বেশ কয়েক বছরে প্রতিটি জেলা হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালে অর্থপেডিক অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামোর বিপুল মানোন্নয়ন ঘটানো হয়েছে বলেই স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি। ফলে, হাড়ের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে (Swasthya Sathi) বেসরকারি হাসপাতালে নয়, সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা সম্ভব। গত সেপ্টেম্বর মাসে স্বাস্থ্যসাথীর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, অর্থপেডিকের পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতালেই করতে হবে।
একমাত্র সরকারি হাসপাতাল যদি কোনও বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে থাকে তবেই সেই অস্ত্রোপচার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে (Swasthya Sathi) হবে। কিন্তু, সেই সময় মুর্শিদাবাদে স্বাস্থ্যদফতর জানিয়েছিল, জরুরী অবস্থা ব্যতিরেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বেসরকারি হাসপাতাল অর্থোপেডিকের চিকিৎসায় সরাসরি রোগী ভর্তি করা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অর্থোপেডিকের বেশির ভাগ পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে চলে যাচ্ছে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে। আর সেই অপারেশন হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে।
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর এলাকায় সরকারি হাসপাতাল থেকে অর্থপেডিক রোগীদের বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে রেফারের ঘটনা বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। তাদের সবাইকে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের (Swasthya Sathi) মাধ্যমে পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। শুধু মুর্শিদাবাদ নয় মালদাতেও একই ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু রাজ্যের সকল নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা এখনো চালু আছে কিছু জায়গা বাদ দিয়ে।
JIO – জিওর সব রিচার্জের খরচ বাড়তে চলেছে, কত টাকা বাড়ল? পুরো তালিকা দেখুন।
আর এই ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এবার শুধু ওই দুই জেলা নয় সারা রাজ্যেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi) দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে হাড়ের চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়ম কার্যকরী করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন। মূলত, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ব্যবহার করে অসাধুভাবে চিকিৎসা করাকে রোধ করতে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে গৃহীত এই পদক্ষেপটি প্রশংসিত হচ্ছে সব মহলেই।
Written by সম্প্রীতি বোস।
Ration Card – প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেপ্তার হতেই পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হলো 2 কোটি রেশন কার্ড। আরও