বেতন কমিশন বা Pay Commission নিয়ে ফের একবারের জন্য দারুণ তোড়জোড় শুরু হল। আসন্ন ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর কলকাতায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সর্বভারতীয় রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সভার বৈঠক। এই বৈঠকে অষ্টম বেতন কমিশন গঠন এবং পুরনো পেনশন কমিশন ফিরিয়ে আনার দাবি উঠতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে নেওয়া হতে পারে বড় সিদ্ধান্ত।
8Th Pay Commission Impliment News.
দুর্গাপুজোর আগেই সপ্তম বেতন কমিশন (Pay Commission) অনুযায়ী ডিএ বেড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের। সূএের খবর অনুযায়ী, কয়েক মাস পরেই আরও এক দফায় বাড়তে পারে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা। এরই মাঝে বেতন কাঠামো পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশে কার্যকর হয়েছিল সপ্তম বেতন কমিশন (7Th Pay Commission). সেই অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি কর্মীদের ন্যূনতম মাসিক বেতন হলো ১৮ হাজার টাকা।
এর আগে দুর্গাপুজোর সময় কালে সরকারি কর্মীদের (Government Employees) চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়। ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে নয়া ডিএ। বর্তমানে তাদের ডিএ বেড়ে ৪৬ শতাংশ হয়েছে। তবে, বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে আরও এক দফায় ডিএ বাড়তে (Pay Commission) পারে সরকারি কর্মীদের এবং সেক্ষেত্রে ৪ থেকে ৫ শতাংশ হারে ডিএ বাড়তে পারে তাদের।
এদিকে মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) ৫০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেললে তা মূল বেতনের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। অপরদিকে, ডিএ বাড়লে হাউজ রেন্ট অ্যালউয়েন্স (HRA) এবং ট্রাভেল অ্যালউয়েন্সও (TA) বাড়তে পারে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের। এদিকে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে জাতীয় পেনশন স্কিম (NPS) এবং পুরোনো পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি চলছে দেশে। বহু ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মীরা পুরোনো ব্যবস্থা (Pay Commission) চালু করার দাবি করেছে।
মূলত নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে আপত্তি চলছে সরকারি কর্মীদের। সরকারি কর্মীদের বক্তব্য, নতুন পেনশন স্কিমের অধীনে অবসর গ্রহণের পরে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত তারা। একজন ব্যক্তি কত বছরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কী ধরনের বিনিয়োগ (Pay Commission) করা হয়েছে, বিনিয়োগ থেকে কত আয় হয়েছে, এই সমস্ত বিষয় গুলির উপর নয়া পেনশন প্রকল্প নির্ভর করে।
সেখানে পুরোনো ব্যবস্থায় (Pay Commission) শেষ পাওয়া বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পাওয়া যায়। যা নির্ধারিত ছিল। সেই সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও মিলত এতে। এদিকে নতুন পেনশন প্রকল্পের আওতায় নিজের কর্মজীবনে যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করেন কর্মচারীরা, অবসরের সময় সেটার ৬০ শতাংশ টাকা তোলা যায়। যে টাকা তুললে কর দিতে হয় না। বাকি ৪০ শতাংশ অ্যানুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, শেষ যে বেতন তুলেছিলেন সরকারি কর্মচারী, সেটার ৩৫ শতাংশের মতো পেনশন বাবদ পাওয়া যায়। তবে সব পেনশন বাবদ এটি পাওয়া যাবে সেই বিষয়ক কোনো নিশ্চয়তা নেই। সবটাই বাজারের উপর নির্ভর করে। এমতাবস্থায় সরকারি কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, পুরোনো পেনশন প্রকল্পে (Pay Commission) কোনও ঝুঁকি নেই। নতুন পেনশন প্রকল্পে ঝুঁকি আছে। যদিও অপর অংশের বক্তব্য, ন্যাশনাল পেনশন স্কিম যে বাজার নির্ভর তা ঠিক।
কিন্তু দীর্ঘকালীন ক্ষেত্রে তাতে বেশি লাভবান হবেন কর্মীরা। তবে ঝুঁকি নিতে নারাজ অধিকাংশ সরকারি কর্মী। এর আগে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বাজেট বরাদ্দ থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন দিতো সরকার। বাজপেয়ী জমানায় চালু হয় ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (National Pension System). ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় এনপিএস। এই নয়া ব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক বোঝা হালকা হয়। প্রাথমিক ভাবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রেই এটা (Pay Commission) প্রযোজ্য ছিল।
পরবর্তীতে সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য তা প্রযোজ্য হয়। তবে বিগত কয়েক বছরে কিছু রাজ্যে নতুন করে চালু হয় ওপিএস। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা নতুন পেনশন স্কিমের বিরোধিতা করায় একাধিক রাজ্যে পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনার পক্ষে দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। তাই লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের এই দাবিকে (Pay Commission) কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মানা হয় কিনা সে বিষয়টিই এখন দেখার।
Written by Sampriti Bose.
অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে DA ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কত টাকা বেতন বাড়লো? কবে থেকে চালু?