পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের জন্য রয়েছে দারুণ সুখবর। কৃষকদের কৃষিক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য এবং কৃষকরা যাতে সুষ্ঠুভাবে কৃষিকাজ চালিয়ে যেতে পারেন তার জন্য রাজ্য সরকার তথা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে নানাপ্রকার প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলিতে কৃষকদের বিভিন্ন অংকের টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, এসমস্ত প্রকল্পের অধীনে কৃষকরা ব্যাংক লোন থেকে শুরু করে কৃষি যন্ত্রপাতি সহ নানা প্রকার সুবিধাও পেয়ে থাকেন। তবে এই প্রকল্পগুলির অধীনে কৃষকরা বিভিন্ন সময়ে অনুদান পেয়ে থাকেন অর্থাৎ প্রকল্পগুলিতে প্রতি মাসে অথবা দ্বিমাসিক অথবা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে টাকা দেওয়া হয়ে থাকে।
সুতরাং, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কৃষকরা বুঝতে পারেন না তারা কখন, কোন প্রকল্পে টাকা পেতে চলেছেন। আর বর্তমানে বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, এই চলতি মাসে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে কৃষকরা ছোটো বড়ো ছয়টি প্রকল্পে অনুদান পেতে চলেছেন। আর এই খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পরই কৃষকরা এই নভেম্বর মাসে কোন কোন প্রকল্পের অধীনে টাকা পেতে চলেছেন তা নিয়ে প্রশ্নের অন্ত নেই। যার জেরে আজ আমরা এই পোস্টে সমস্ত কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষকরা নভেম্বর মাসে কোন কোন প্রকল্পে টাকা পেতে চলেছেন তার একটি তালিকা নিয়ে হাজির হয়েছি।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক চলতি মাসে অর্থাৎ এই নভেম্বর মাসে কৃষকরা কোন কোন প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেতে চলেছেন ?
১. কৃষক আত্মা প্রকল্প:- কৃষিদপ্তরের তরফে কার্যকরী কৃষক আত্মা প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে চাষের ফলন বৃদ্ধি এবং চাষের খরচ কমানোর মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কৃষকদের সাহায্য করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি মাছ চাষী এবং পশুপালকদেরও সহায়তা করা হয়ে থাকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্য সরকারগুলির যৌথ উদ্যোগে কার্যকরী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকরা সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত সাহায্য পেতে পারেন।
বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুসারে জানা গিয়েছে যে, এই চলতি মাসে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে কৃষকরা কৃষক আত্মা প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেতে চলেছেন।
২. কৃষক বার্ধক্য ভাতা:- পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যেসমস্ত কৃষক বর্তমানে বয়সের ভারে কৃষিকাজে অক্ষম, তাদের প্রত্যেক মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই সুবিধাভোগী কৃষকের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হতে হবে। সুতরাং নিয়মমাফিক এই নভেম্বর মাসেও কৃষকরা কৃষক বার্ধক্য ভাতার অধীনে অনুদান পেতে চলেছেন।
BSNL তার সমস্ত গ্রাহককে দিচ্ছে ২০০০ GB ফ্রী ডেটা, আজই রিচার্জ করুন
৩. কিষাণ মানধন যোজনা:- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী কিষাণ মানধন যোজনার অধীনে কৃষকরা ৬০ বছর বয়স বেরোনোর পর প্রত্যেক মাসে ৩০০০ টাকা করে পেনশন হিসেবে পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ এই যোজনার অধীনে কৃষকরা বছরে ৩৬ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। তবে এই যোজনা সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের আগে থেকেই কিষাণ মানধন যোজনা অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করে রাখতে হবে। এই যোজনার কৃষকদের নাম নথিভুক্ত করার বয়সসীমা হলো ১৮ বছর থেকে ৪০ বছর।
৪. কিষাণ ক্রেডিট কার্ড:- কৃষকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিগত কয়েক বছরে যেসমস্ত প্রকল্পগুলি কার্যকরী করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রকল্প হলো কিষাণ ক্রেডিট কার্ড। এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। যদিও কত টাকা ঋণ দেওয়া হবে সেটি সম্পূর্ণভাবে এই কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডিট লিমিটের উপর নির্ভর করছে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের সর্বনিম্ন বয়স হলো ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স হলো ৭৫ বছর অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৭৫ বছর বয়সে যেকোনো কৃষক এই কার্ডের অধীনে সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারবেন।
যেসকল কৃষকরা এই প্রকল্পের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তারা এই চলতি মাসে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে এই প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেতে চলেছেন।
৫. Paddy Purchase:- রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা নিজেদের কৃষিজমিতে উৎপন্ন ধান সরকারকে বিক্রি করে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করতে পারেন। যদিও একজন কৃষক কতো টাকা পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে তার জমিতে উৎপন্ন হওয়া ধানের পরিমাণের ওপর। বিগত মাসে অথবা এই মাসে যারা এই Paddy Purchase প্রকল্পের অধীনে ধান বিক্রি করেছিলেন তারা এই নভেম্বর মাসে বিক্রীত ধানের টাকা পেতে চলেছেন।
৬. বাংলা শস্য বীমা:- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এই প্রকল্পটি মূলত দরিদ্র কৃষকদের সহায়তা করার জন্য কার্যকরী করা হয়েছে। বছরে দুবার খারিফ মরশুমে এবং রবি মরশুমে এই বাংলা শস্য বিমার অধীনে কৃষকরা অনুদান পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে তারা যাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা ফেরত পান তা নিশ্চিত করার জন্যই এই বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পটি কার্যকরী করা হয়েছে। যদিও কোন কৃষক বীমার ক্ষেত্রে কত টাকা পাবেন তা নির্ভর করছে তাদের ফসলের পরিমাণের ওপর। বিগত দিনে যারা এই প্রকল্পের অধীনে ফসলের বীমার জন্য আবেদন করেছিলেন তারা এই নভেম্বর মাসে এই প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেতে চলেছে।