পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জনগণ যাতে রাজ্য সরকারের সমস্ত ধরনের পরিষেবা ঠিকঠাকভাবে পেতে পারে তার জন্য প্রথম থেকেই বারবার উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন প্রকার সুবিধা যাতে মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে যায় তার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। অনেক সময়ই নাগরিকদের নানা প্রকার কাজ সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন প্রকার নথির প্রয়োজন হয়ে থাকে, তবে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সাথে না থাকার কারণে বিভিন্ন প্রকার ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় পশ্চিমবঙ্গবাসীকে। আর তাই পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকদের এই সমস্যা থেকে রেহাই দিতে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এমন এক পোর্টাল কার্যকরী করা হয়েছে, যা থেকে ২৪ টি বিভিন্ন ক্ষেত্রের সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন নাগরিকরা।
বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই পোর্টালটি থেকে রাজ্যের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ সকলেই সুবিধা পেতে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে এই পোর্টালটিকে একটি ডিজিটাল লকারের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই পোর্টালটি ব্যাংকের লকারের মতো এক্ষেত্রে সমস্ত সার্টিফিকেট সুরক্ষিতভাবে রাখা থাকবে, যেকোনো প্রয়োজনে নাগরিকরা যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করে এই পোর্টাল থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
রাজ্য সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের জন্য কার্যকরী এই পোর্টালটি বাংলার আই ক্লাউড নামে পরিচিত। বর্তমানে এই পোর্টাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকরা ২৪ টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট পেয়ে যেতে চলেছেন।
এই পোর্টালটি থেকে রাজ্যবাসী যে সার্টিফিকেটগুলি পেতে চলেছেন সেগুলি হলো:-
১. খাদ্যসাথী
২. স্বাস্থ্যসাথী
৩. জাতিগত শংসাপত্র
৪. মাধ্যমিকের মার্কশিট
৫. মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট
৬. উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট
৭. উচ্চ মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট
৮. ড্রাইভিং লাইসেন্স
৯. যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন
১০. জন্ম সার্টিফিকেট
১১. মৃত্যু সার্টিফিকেট
১২. বাসিন্দা সার্টিফিকেট
১৩. ইনকাম সার্টিফিকেট
১৪. ট্রেড লাইসেন্স (UD & MA)
১৫. যেকোনো মেডিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট বা মেডিক্যাল সেন্টারের আবেদনপত্র
১৬. ওষুধ / ফার্মেসি এর লাইসেন্স সার্টিফিকেট
১৭. যেকোনো ফ্যাক্টরির অ্যাপ্লিকেশন অথবা লাইসেন্স
১৮. বয়লারের অ্যাপ্লিকেশন অথবা লাইসেন্স
১৯. বয়লার তৈরির লাইসেন্স (Manufacturer License for Boilers)
২০. কারখানার প্ল্যান অনুমোদন বা সংশোধনের অর্ডার (Plan Approval / Amendment Order for Factories)
২১. ফ্যাক্টরির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
২২. পরিযায়ী শ্রমিকদের লাইসেন্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন
২৩. বিল্ডিং এবং অন্যান্য কনস্ট্রাকশনে কর্মরত শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
২৪. বিল্ডিং এবং অন্যান্যক্ষেত্রের কন্ট্রাকে কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
এতোদিন পর্যন্ত এসমস্ত সার্টিফিকেটগুলির জন্য নাগরিকদের যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হতো। তবে এখন এসমস্ত সার্টিফিকেটও নাগরিকদের হাতের মুঠোয় এনে দেওয়া হলো রাজ্য সরকারের তরফে।
UIDAI প্রকাশ করলো আধার কার্ডের নতুন নিয়ম, প্রত্যেক নাগরিককে করতে হবে এই কাজ
চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক, বাংলার আই ক্লাউড ওয়েবসাইট থেকে আপনারা কিভাবে বিভিন্ন ধরনের সার্টিফিকেট গুলি ডাউনলোড করতে পারবেন?
১. বাংলার আই ক্লাউড পোর্টাল থেকে বিভিন্ন ধরনের সার্টিফিকেটগুলি ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে বাংলার আই ক্লাউড পোর্টালে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রথমেই বাংলার আই ক্লাউড এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://banglaricloud.wb.gov.in/ -এ যেতে হবে।
২. এরপর হোম পেইজে থাকা Sign Up অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
৩. উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে যে নতুন পেজটি আসবে তাতে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, বৈধ মোবাইল নম্বর, আধার নম্বর এবং পাসওয়ার্ড সঠিকভাবে লিখে Submit অপশনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।
৪. রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে এরপর Sign In অপশনে ক্লিক করে লগইনের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে হবে।
৫. লগইন করা হলে আপনি দিয়ে যে সার্টিফিকেটগুলি চাইছেন সেই সার্টিফিকেটগুলি ডাউনলোড করতে পারবেন।
তবে রাজ্য সরকারের তরফে শিক্ষার্থীদের আরও জানানো হয়েছে যে, ২০১৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২১ সালে যারা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন তাদের সমস্ত সার্টিফিকেটগুলি এই পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে। তবে তার আগের ছাত্র-ছাত্রীদের সার্টিফিকেট এখনও পর্যন্ত এই পোর্টালে আপলোড করা হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে অত্যন্ত শীঘ্রতার সঙ্গে এই পোর্টালে ২০১৫ সালের পূর্বের ছাত্রছাত্রীদের সার্টিফিকেট গুলি আপলোড করা যায় যাতে করে তারাও এই পোর্টালের সুবিধা ভোগ করতে পারেন।