খুব কম খরচে দীঘা ভ্রমণ করুন – খাওয়াদাওয়া, হোটেল, কোথায় ঘুরবেন ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে নিন । Digha Tour in West Bengal at a very low cost, learn details

Digha Tour in West Bengal at a very low cost, learn details


আপনি কী কম খরচায় কোথাও ঘুরতে যেতে চাইছেন? তাহলে এই খবরটি আপনার জন্য। আজকে আপনাদের সাথে দীঘা ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো। কীভাবে দীঘা যাবেন, কোথায় থাকবেন, কোন কোন জায়গায় ঘুরবেন প্রভৃতি সমস্ত তথ্য নিয়ে নীচে বিশদে আলোচনা করা হলো।

• কীভাবে যাবেন দীঘায়?
কলকাতা থেকে দীঘা ট্রেনে বা বাসে যেকোনোভাবেই যেতে পারবেন। ট্রেনে যেতে হলে 

১) তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস (সকাল ৬.৫০ এ ছাড়ে এবং সকাল ১০.১৫ এর মধ্যে দীঘায় পৌঁছোয়)

২) পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস হাওড়া (এই ট্রেনটি হাওড়া থেকে সকাল ৭.৫০এ ছাড়ে এবং দীঘায় পৌঁছোয় সকাল ১১.৫৫ তে ) (উল্লেখ্য দ্বিতীয় ট্রেনটি সপ্তাহে শুধু শনিবার করেই যায়)

এই দুটি ট্রেনে যেতে পারেন। অথবা লোকাল ট্রেনে করেও দীঘায় যেতে পারেন।

এছাড়া কলকাতা থেকে বাসে করেও দীঘা যেতে পারেন। সরকারি বাসে করে দীঘা গেলে মাথা পিছু প্রায় দেড়শো টাকা করে লাগে এবং বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া প্রায় সাড়ে তিনশো টাকা অবধি। কিংবা ট্রেন বা বাস কোনোভাবেই যেতে না চাইলে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করেও দীঘা ভ্রমণের আনন্দ নিতে পারেন।

• দীঘায় এসে কী কী করবেন?

° হোটেল খোঁজা-
দীঘায় এসেই প্রত্যেকেরই প্রথম কাজ হোটেল খোঁজা। আপনি নিউ দীঘা বা ওল্ড দীঘা যেকোনো জায়গাতেই হোটেলে উঠতে পারেন। দীঘায় সারা রাস্তা জুড়ে বহু হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে আপনার পছন্দমতো ও বাজেটের মধ্যে থাকা যেকোনো হোটেলরুম কিছুদিনের জন্য বুক করতে পারেন।


• কীভাবে দীঘার মজা উপভোগ করবেন?
হোটেল খোঁজা সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার দীঘার মন ভোলানো সমুদ্রে এসে স্নানের আনন্দ নিন। নিজের পরিবারের কিংবা বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে দীঘার এই ঢেউ খেলানো সমুদ্রে স্নানের মজাই আলাদা।

স্নান হয়ে গেলে আপনি বিভিন্ন খাওয়ার হোটেল, রেস্টুরেন্ট প্রভৃতি থেকে আহার করে নিতে পারেন। দীঘাতে খাওয়ার প্রচুর হোটেল রয়েছে আপনি আপনার পছন্দসই ও খরচের মধ্যের হোটেল / রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফে বেছে নিয়ে খাবারের মজা নিন। বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের ডিশ কিংবা পাতি বাংলার বিভিন্ন রান্না করা পদ – সবকিছুই পেয়ে যাবেন এই দীঘায়।

আহারের পরে ঘুরতে চলে যেতে পারেন দীঘার বিখ্যাত বিচ মার্কেটে। সেখানে বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ দেখতে পাবেন এবং সেখান থেকে টুকিটাকি মাছের বিভিন্ন পদও খেয়ে দেখতে পারেন।

সন্ধ্যাবেলা সমুদ্রের তীরে এসে বন্ধুদের সাথে এসে সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে পারেন। প্রকৃতির সৌন্দর্য যে কতটা মনোমুগ্ধকর তা বুঝতে পারবেন।

রাতে দীঘার আশেপাশের বিভিন্ন ফুটপাতের দোকান গুলো থেকে নানান শৌখিন জিনিস, আসবাবপত্র কিনতে পারেন এবং সবশেষে খেয়েদেয়ে হোটেলে এসে রাত্রিযাপন করুন।

পরেরদিন সকালে দীঘার মোহনায় এসে সূর্যোদয় দেখতে পারেন। দীঘার মোহনায় সমুদ্র উপকূলের পাশাপাশি ফিশ মার্কেটও যথেষ্ট জনপ্রিয়। এখান থেকে মাছ কিনে হোটেলে গিয়ে রান্না করে খেতে পারেন।

এছাড়া দীঘার মোহনা থেকে শংকরপুরেও ঘুরতে যেতে পারেন। সম্প্রতি শংকরপুরেও সমুদ্র উপকূল বরাবর বিভিন্ন রকম সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হয়েছে। এইসব দেখে হোটেলে এসে রেস্ট নিন।

বিকালবেলায় দীঘার বিভিন্ন পার্কে ঘুরতে বেরোতে পারেন। দীঘায় অনেক দারুন দারুন পার্ক রয়েছে দীঘা অমরাবতী পার্ক এদের মধ্যে অন্যতম। এই পার্কে রোপওয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে এসে বাকি সময়টা কাটিয়ে সেদিনের মতো হোটেলে ফিরে যেতে পারেন।

পরেরদিন সকালেই দীঘা থেকে অটোভাড়া করে তালসারি চলে আসতে পারেন এবং সমুদ্র সৈকতের পাশের রাস্তা দিয়ে গাড়ি করে আসার সময় প্রকৃতির অপরূপ রূপমাধুরীর সাক্ষী হতে পারবেন।

সেখানে পৌঁছানোর পরে ডিঙি নৌকা করে সামনের দ্বীপে যেতে পারেন। দ্বীপের তিরবর্তী সমুদ্রের ঢেউ ও চারিদিকের বিভিন্ন গাছের দৃশ্য উপভোগ করে ফের উদয়পুর বিচে চলে আসুন। ফেরার পথে অসিয়ানা বিচেও যেতে পারেন। অবশেষে সবকিছু দেখা হয়ে গেলে হোটেলে এসে শেষরাত্রি কাটিয়ে নিন।

পরেরদিন দীঘা ভ্রমণের সমস্ত চিরমধুর স্মৃতি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। ফেরার পথে মন যেন  দীঘার পথে অকুল দৃষ্টিতে চেয়ে থাকবে। কোনোদিন যদি ফের সময় পান তাহলে আবারও দীঘা ঘুরে আসতে পারেন। আসলে দীঘা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান তাই যতই সেখানে যাওয়া যাক না কেন প্রতিবারই বিভিন্ন নিত্যনতুন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারবেন।

Leave a Comment