দেশের অসংখ্য অবসর প্রাপ্ত কর্মচারীদের জন্য এসে গেল বড় খবর (EPFO). এখন থেকে সহজেই অবসর জীবনে তারা ইপিএফও হিসেবে প্রচুর টাকা পাবেন। তবে এর জন্য অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে বিশেষ কয়েকটি পদক্ষেপ। মূলত বেসরকারি সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের অবসরের পর পেনশনের (Pension) ব্যবস্থা করে ইপিএফও। কর্মীদের সমগ্র কর্মজীবনে প্রতিমাসে বেতন এবং ডিএ (Dearness Allowance) ১২ শতাংশ ইপিএফে (Employees Provident Fund Organisation) জমা করা হয়।
Invest in EPFO to Get 5 Crore Rupees in Your Retirement
এই সম পরিমাণ টাকা আবার জমা করা হয় নিয়োগকারী সংস্থার তরফ থেকেও। যদিও এক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির শেয়ার দুইভাগে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৮.৩৩ শতাংশ টাকা যায় ইপিএফ স্কিমে এবং ৩.৬৭ শতাংশ টাকা জমা হয় ইপিএফে। ন্যূনতম ১০ বছর এই ভাবে বিনিয়োগ পদ্ধতি চলতে থাকলে EPFO থেকে পেনশন পেতে শুরু করেন কর্মীরা।
কর্মজীবীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে
কর্মীদের সর্বোচ্চ পেনশনযোগ্য পরিষেবা হয় ৩৫ বছর। কোনো কর্মী অবসর গ্রহণ করার পর EPFO থেকে পেনশন হিসাবে কত টাকা পাবেন তা গণনার একটি নির্দিষ্ট ফর্মুলা রয়েছে। সেই ফর্মুলাটি হল ইপিএস = গড় বেতন x পেনশনযোগ্য পরিষেবা/৭০। এই হিসাবে গড় বেতন মানে মূল বেতন এবং ডিএ, যা বিগত ১২ মাসের ভিত্তিতে গণনা করা হয়। এক্ষেত্রে কর্মীদের সর্বোচ্চ পেনশন যোগ্য পরিষেবার সময়সীমা হলো ৩৫ বছর।
এই পেনশন যোগ্য বেতন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। EPFO বা এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা যা কর্মীদের অবসরকালীন সঞ্চয় বাড়াতে উৎসাহিত করে। এই ইপিএফও থেকে কর্মীরা কিছু নির্দিষ্ট খরচ যেমন উচ্চ শিক্ষা, বিবাহ, বাড়ি নির্মাণ, অথবা চিকিৎসা খরচের জন্য আংশিক অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। এটি কর্মীদের একটি জরুরি তহবিল হিসেবে কাজ করে, বিশেষ করে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে।
ইপিএফ একটি স্থির বার্ষিক সুদ (EPFO Interest Rate) প্রদান করে, যা বর্তমানে ৮.২৫% এবং এই সুদের ওপর কোন কর আরোপিত হয় না। কোন ব্যক্তি তার ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং স্বপ্ন পূরণ করার জন্য একটি সঠিক সঞ্চয় পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইপিএফ তাকে দীর্ঘমেয়াদে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে সহায়তা করতে পারে, তবে এর জন্য নিয়মিত এবং পরিকল্পিত সঞ্চয় প্রয়োজন।
How to Save Money on EPFO to Get High Return
1) ৩ কোটি টাকা পেতে – যদি কোনো ব্যক্তির লক্ষ্য হয় ৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করা, তাহলে তাকে ৪০ বছর ধরে প্রতি মাসে ৮৪০০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে। এই পরিমাণ সঞ্চয় করলে, মেয়াদ শেষে তিনি প্রায় ৩০১৯৪৮০৪ টাকা পাবেন। এটি তার অবসরকালীন সময়ে একটি শক্তিশালী আর্থিক বাফার হিসেবে কাজ করবে।
2) ৪ কোটি টাকা পেতে – ৪ কোটি টাকা সঞ্চয় করতে হলে, তাকে প্রতি মাসে ১১২০০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে এই পরিমাণ সঞ্চয় করলে তার মেয়াদ শেষে প্রায় ৪০২৫৯৭৩৮ টাকা হবে। এটি তাকে একটি আরামদায়ক জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে এবং বড় ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সহায়ক হবে।
3) ৫ কোটি টাকা পেতে – যদি কোনো ব্যক্তির লক্ষ্য হয় ৫ কোটি টাকা সঞ্চয় করা, তাহলে প্রতি মাসে ১২০০০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে। এই পরিমাণ সঞ্চয় করলে, মেয়াদ শেষে তার সঞ্চয় প্রায় ৫০৮৭০৯৯১ টাকা হয়ে যাবে। এটি তার জন্য একটি বিশাল আর্থিক সুরক্ষা গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যতের জন্য বড় বড় স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হবে।
হুড়মুড়িয়ে কমে যাবে বিদ্যুৎ বিল! এই সামান্য কাজটি বাড়িতে করে নিন
এই সঞ্চয় পরিকল্পনা গুলি কোনো ব্যক্তির আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে অবসরকালীন সময়ে। সঠিকভাবে সঞ্চয় করে এবং সময় মতো বিনিয়োগের মাধ্যমে, তিনি একটি সুরক্ষিত এবং স্বচ্ছন্দ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবেন। ইপিএফের নিয়মিত সঞ্চয় এবং পরিকল্পনা তাকে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে সহায়ক হবে। এভাবেই সঞ্চয় স্কিম গুলি অবসর প্রাপ্ত কর্মচারীদের অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে।
Written by Sampriti Bose.