ভারতে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে চলেছে। দেশের রান্নার গ্যাস ব্যবহারকারীদের জন্য এলো দারুণ সুখবর। লোহার ভারি গ্যাসের পরিবর্তে এবার আসতে চলেছে হালকা কম্পোজিট সিলিন্ডার। পাশাপাশি, দাম বাড়তে চলেছে রান্নার গ্যাসের। রান্নার গ্যাস কিনতে গ্রাহকদের দিতে হবে অতিরিক্ত ৮০০ টাকা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হলো এই গুরুত্বপূর্ণ আপডেট।
Composite LPG Cylinder Latest News Update.
বর্তমানে রান্নার গ্যাস (Composite LPG Cylinder) হলো একটি মহার্ঘ জিনিস। প্রায় সকলের বাড়িতেই রান্নার জন্য এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্যবৃদ্ধির জন্য এতদিন অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন দেশের অসংখ্য মানুষ। তবে সম্প্রতি আগস্ট মাসে প্রতি সিলিন্ডার পিছু রান্নার এলপিজি সিলিন্ডারের (LPG Gas Cylinder) দাম ২০০ টাকা কমিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মূলত সাধারণ গৃহস্থ বাড়িতে যে এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করা হয় সেটি আসে একটি ধাতব সিলিন্ডারে।
সেই সিলিন্ডার গুলি প্রধানত হয়ে থাকে লোহার তৈরি। তবে এবার ভারি লোহার সিলিন্ডারের বদলে আসতে চলেছে কম্পোজিট সিলিন্ডার। আর এই কম্পোজিট সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) নিতে হবে গ্রাহকদের। সূএের খবর অনুযায়ী, অতিরিক্ত ৮০০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে এই কম্পোজিট সিলিন্ডার। বর্তমানে একটি সিলিন্ডার নেওয়ার জন্য প্রথমে গ্রাহকদের ২২০০ টাকা জমা করতে হয়।
তবে কম্পোজিট সিলিন্ডারের জন্য দিতে হবে ৩০০০ টাকা। যদি কেউ ডবল সিলিন্ডার নিতে চান তার জন্য জমা করতে হবে ১৬০০ টাকা। উল্লেখ্য, পুরনো লোহার সিলিন্ডার জমা করে কম্পোজিট সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। কম্পোজিট সিলিন্ডারের দাম একটু বেশি হলেও এই সিলিন্ডার গুলি ব্যবহারের ফলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়৷ কম্পোজিট সিলিন্ডার ব্যবহারের সুবিধাগুলি হলো।
ওজনে হালকা
গৃহস্থ বাড়িতে ব্যবহৃত রান্নার এলপিজি গ্যাসের ওজন হলো ১৪.২ কেজি এবং এর সাথে যুক্ত হয় লোহার সিলিন্ডারের ওজন। সে ক্ষেত্রে একটা ভর্তি সিলিন্ডারের (Composite LPG Cylinder) ওজন অনেকটাই বেশি হয়ে যায়। তবে কম্পোজিট সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে সেই ওজন অনেকটাই কম হবে কারণ মূল সিলিন্ডারটি অনেক হালকা হওয়ায় এতে কোনও বাড়তি ওজন যুক্ত হয়না।
বহন খরচ কম
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে রান্নার যে লোহার গ্যাস সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) গুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলিতে প্রাণহানির ও ঝুঁকি রয়েছে যথেষ্ট। কোন কারনে যদি গ্যাস জনিত দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে লোহার সিলিন্ডার ফেটে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে বেশি। সেই সম্ভাবনা কম্পোজিট সিলিন্ডারে নেই। এই সিলিন্ডার লিক হবে না। আর হলেও গরম হয়ে ফাটল বা ছিদ্র হলেও নিজের থেকেই সিল করে দেবে। আর কম্পোজিট সিলিন্ডারের (Composite LPG Cylinder) ওজন অনেকটাই কম হওয়ায় এটি খুব সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহন করা যায়।
স্থায়ী ও নিরাপদ
লোহার সিলিন্ডারের একটি অন্যতম অসুবিধা হলো এখানে বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না যে কতটা গ্যাস অবশিষ্ট রয়েছে। তাই অনেক সময় গ্যাস থাকা সত্ত্বেও খালি ভেবে সিলিন্ডারকে (Composite LPG Cylinder) বাতিল করে দিয়ে থাকে গ্রাহকেরা। কিন্তু কম্পোজিট সিলিন্ডার গুলিতে গ্রাহকেরা বাইরে থেকে দেখে বুঝতে পারবে যে কতটা গ্যাস এখনো বেঁচে রয়েছে। ফলে একটুও গ্যাস আর নষ্ট হবে না।
দুর্ঘটনার সম্ভাবনা নেই
রান্নার বর্তমান গ্যাস সিলিন্ডার গুলি লোহা দিয়ে তৈরি হওয়ায় পুরনো হয়ে গেলে এগুলিতে মরচে ধরে সহজে। যার কারণে সিলিন্ডার ক্রমশ ভঙ্গুর হতে শুরু করে। ফলে সিলিন্ডার ফেটে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা থাকে। আবার মেঝেতে এই সিলিন্ডার রাখলে সেখানেও দাগ পড়ে যায়। কিন্তু কম্পোজিট সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) ফাইবার দিয়ে তৈরি হওয়ায় দুয়ের কোন অসুবিধাই নেই এখানে।
কম্পোজিট সিলিন্ডার (Composite LPG Cylinder) লোহার তৈরি না হওয়ায় সেটিতে মরচে ধরারও কোনও ভয় থাকে না। ফলে মেঝে নষ্ট হওয়ারও কোনও ভয় নেই ব্যবহারকারীদের। উল্লেখ্য, যেসব গ্রাহকদের ইন্ডিয়ান অয়েলের ইন্ডেন গ্যাস রয়েছে তারাই একমাত্র তাদের পুরনো সিলিন্ডার ফেরত দিয়ে এই নতুন সিলিন্ডার নিতে পারবেন। আর যারা একেবারেই নতুন গ্যাসের কানেকশন নেবেন তাদের জন্য ১০ কেজির সিলিন্ডারের জন্য এককালীন ৩ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।
মূলত গ্যাস ডিলারদের মতে, দেশে ইন্ডিয়ান ওয়েলের গ্রাহকের সংখ্যাই বেশি। তাই সংস্থার তরফ থেকেই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ডিলারদের কাছে। আগামী ৩১ মার্চ ২০২৪ এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫০% গ্রাহককে এই সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। রান্নার এলপিজি গ্যাসের (Composite LPG Cylinder) বদলে কম্পোজিট সিলিন্ডার ব্যবহার করে গ্রাহকরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন ইন্ডিয়ান অয়েলের আধিকারিকরা।
Written by Sampriti Bose.
প্রত্যেক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পাবে ফ্রিতে টেস্ট পেপার। কবে থেকে