চলতি ডিসেম্বর মাস থেকেই মোবাইল কানেকশনের সিম কার্ড (SIM Card) তোলার নিয়মে আসতে চলেছে বিরাট পরিবর্তন। আর্থিক প্রতারণা ও জালিয়াতি ঠেকাতে এবং দেশের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের (DOT) তরফে জারি করা হলো এই নতুন নিয়ম। নিয়মের অমান্য হলে গ্রাহককে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে। এমনকি জেল পর্যন্ত হতে পারে বিক্রেতা ও মোবাইল অপারেটরদের।
SIM Card New Rule Started.
বর্তমানে সকলেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। আর মোবাইল ফোনকে চালু রাখতে হলে সেটিতে একটি সিম কার্ড (SIM Card) থাকা আবশ্যক। অনেকেই তাদের পুরনো সিম কার্ড নাম্বারটিকে বদলিয়ে নতুন সিম কার্ড নিতে চান। কিন্তু এবার এই নতুন সিম কার্ড তোলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের তরফে জারি করা হলো একাধিক নিয়ম। যার জেরে বিপাকে পড়তে চলেছেন বহু গ্রাহক।
মূলত SIM Card সাহায্যে সাধারণ গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে জালিয়াতির ঘটনা এক ব্যাধির আকার নিয়েছে ভারতে। এসএমএসে পাঠানো লিঙ্কে ভুল করে কোন গ্রাহক ক্লিক করলেই মুহূর্তের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে তার ব্যাংক একাউন্ট। আমজনতার এই আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়ার পাশাপাশি ভুয়ো SIM Card তুলে জঙ্গিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাশকতা ছড়াচ্ছে বলেও সুত্রের খবর।
তাই সরকার তদন্ত করে দেখেছে দেশে SIM Card বিক্রি এবং তা কেনার ক্ষেত্রে যে বিধি চালু আছে তাতে বহু গাফিলতি আছে। আর সেই সুযোগেই এই সব জালিয়াতি ও নাশকতার কাজ চলছে। তাই এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কেন্দ্রীয় টেলি কমিউনিকেশন মন্ত্রক কেওয়াইসি প্রসেসের উপর জোর দিয়েছে। এবার থেকে নতুন সিম কার্ড তোলার ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে নতুন নিয়ম।
এই নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকদের আগে এবার মোবাইল SIM Card বিক্রেতাদের বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন হবে। পাশাপাশি পুলিশ ভেরিফিকেশনও হবে। এই দুটি ধাপ সঠিকভাবে পেরোতে পারলে তবেই কোনও ডিলার বা মোবাইল দোকান সিম কার্ড বিক্রির অনুমতি পাবে। পুরনো সিম কার্ড বিক্রেতাদেরও এই নিয়ম মানতে হবে। আবার গ্রাহকরা সিম কার্ড কিনতে গেলে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে SIM Card কেওয়াইসি সম্পন্ন করতে হবে।
তবেই সিম কার্ড পাবেন। গত ১ অক্টোবর থেকে দেশ জুড়ে এই নিয়ম কঠোরভাবে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু SIM Card ডিলার এবং অপারেটরদের অনুরোধে দুই মাস পিছিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। এই নিয়মে বলা হয়েছে, একজন সাধারণ গ্রাহক ৯ টির বেশি সিম ব্যবহার করতে পারবেন না। পাশাপাশি ইচ্ছে হলেই কোনও সিম তখনই ডিঅ্যাক্টিভেট করতে পারবে না অপারেটর।
এজন্য অন্ততপক্ষে ৯০ দিন সময় দিতে হবে। তারপর ডিঅ্যাক্টিভেট করে সেই একই নাম্বার নতুন গ্রাহককে দেওয়া যাবে। মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটির নিয়ম একই থাকলেও সেখানেও ভেরিফিকেশন প্রসেসে একইভাবে কড়াকড়ি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই দেশের ৬৭ হাজার সিম কার্ড ডিলারের লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাঁরা আর কোনদিন সিম কার্ড বিক্রি বা মোবাইল কানেকশন দেওয়ার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে সরকার।
সেই সঙ্গে কয়েকশো সিম কার্ড বিক্রেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বেশ কিছু সিম কার্ড (SIM Card New Rule) বিক্রেতাকে দ্রুত গ্রেফতার করাও হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। নতুন এই নিয়মের ফলে জিও, এয়ারটেল, ভোডাফোনের মতো মোবাইল কানেকশন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিরও চাপ বেড়ে গিয়েছে। কারণ প্রতিটি সিম রেজিস্টার করিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন করার দায় তাদের উপরই চাপিয়েছে সরকার।
তবে, দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের তরফে গৃহীত এই বিরাট পদক্ষেপটি প্রশংসিত হচ্ছে সব মহলেই। কিন্তু সকলে এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে আবগত হয়ে যান। যদি আপনারা এই নিয়ম সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনাদের এই সম্পর্কে জেনে নিয়ে তবেই SIM Card কিনবেন। নইলে আপনারা সমস্যায় পড়তে পারেন, সেই জন্য আপনারা আগের থেকে সতর্ক হন।
Written by Sampriti Bose.
দ্রুত টাকা বাড়াতে হলে এবং অবসর বয়সে নিশ্চিন্তে কাটাতে হলে এই নিয়মে