জামাইষষ্ঠীর দিন পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকদের (West Bengal Primary Teachers) জন্য এক খুবই খারাপ খবর! এবারে তাদের বেতন (Salary) ফেরত দিতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু কেন এমনটা হবে? সেই সম্পর্কে আজকে আমরা জেনে নিতে চলেছি। বদলে যেতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের (Primary School Teachers) ক্যাটাগরি। যার ফলে ফেরত দিতে হতে পারে বিপুল অংকের বেতন। এমন তথ্য সামনে আসতেই খোদ স্কুল শিক্ষা কমিশনারের দ্বারস্থ হচ্ছেন ডিপিএসসি (DPSC) সচিবরা।
Primary Teacher will Pay Back Their Salary.
এই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা তাঁদের চাকরির সময় কালে একটাই সুবিধা পান। সেটা হল এই সময়ের মধ্যে তাঁদের পদন্নোতি (Primary Teacher Promotion) হয়। পাশাপাশি বেতন দাঁড়ায় হাইস্কুলের শিক্ষকদের স্কেলের সমান। রাজ্য সরকারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মেনেই ২০০৬ এর ১ জানুয়ারি বা তারপর অর্থাৎ ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিযুক্ত শিক্ষকদের বড় অংশই মাধ্যমিক পাশ ও এক বছরের শিক্ষকতার প্রশিক্ষণের প্রেক্ষিতে চাকরি পেয়েছিলেন।
প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন ফেরত!
তাঁদের সেই সময়েই ‘এ’ ক্যাটেগরির শিক্ষক (School Teacher) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ হয় দুই বছরের। তাই অনেক শিক্ষকই এক বছরের ব্রিজ কোর্স করে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ আপ টু ডেট করেন। এতদিন পর তাঁদের ‘এ’ ক্যাটেগরি হিসেবে গণ্য করা না হলে, সার্ভিস বুক রিকাস্ট করতে হবে। এতে প্রত্যেক প্রাথমিক শিক্ষককে ন্যূনতম তিন সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। আর এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক শিক্ষকরা।
পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হতেই একাধিক ডিপিএসসি চেয়ারম্যান বিকাশ ভবনে (Bikash Bhavan) চিঠি লিখে জানতে চাইছেন, এই সব প্রাথমিক শিক্ষকরা চাকরিতে যোগদানের সময়েই ‘এ’ ক্যাটেগরির মর্যাদা পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার পরে ২০১৩ – ১৪ সালে এক বছরের ব্রিজ কোর্সও করেছিলেন। তবে ২০১৩ সালের ৪ মার্চের সরকারি নির্দেশিকাকে দেখিয়ে যে সব শিক্ষক শিক্ষিকা পরে এক বছরের ব্রিজ কোর্স করেছেন, সে দিন থেকেই তাঁদের ‘এ’ ক্যাটেগরি হিসেবে গণ্য করা হবে।
সব প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
এই পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক শিক্ষককে ‘এ’ ক্যাটেগরি হিসেবে গণ্য না করলে, তাঁদের বেতন কাঠামোয় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। স্কুল শিক্ষা কমিশনার অরূপ সেন গুপ্তর সঙ্গে সোমবার যোগাযোগ করা যায়নি। তবে কমিশনারেটের প্রবীণ আধিকারিকদের বক্তব্য, বিষয়টি পুরোপুরি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নীতিগত সিদ্ধান্ত। দপ্তরের পাশাপাশি বিভাগের আইন শাখার নির্দেশ মেনেই শিক্ষকদের ক্যাটেগরি বিভাজনের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু এই খবর সকল প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য নয়, শুধুমাত্র DPSC প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য।
স্কুল শিক্ষা দফতরের এই নিয়ে কি সিদ্ধান্ত?
যদিও একাধিক ডিপিএসসি এর চেয়ারম্যানের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এই সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকার সমস্যায় পড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা আদালতের দ্বারস্থ হলে, তা নিয়ে জটিলতা বাড়বে। এন্টালির ইস্ট পয়েন্ট স্কুলস ফর গার্লস, প্রাইমারির প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা ঘোষ বলেন, ২০০৬ এর মার্চে প্রাথমিক শিক্ষকতার যোগ্যতামানের ভিত্তিতেই এ ক্যাটেগরি শিক্ষিকা হিসেবে চাকরিতে তিনি যোগ দেন। ২০১২ সালে তিনি প্রধান শিক্ষিকা হন।
গরমের ছুটি শেষ হতেই স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা নিয়ে নবান্নের নির্দেশ। আর ছুটি নয়!
২০১৩-১৪ সালে ডিএলএড (D.El.Ed) প্রতিষ্ঠান থেকে এক বছরের ব্রিজ কোর্সও তিনি করেছিলেন। তবে ডিপিএসসি এখন বলছে, ২০১৪ সালে যেদিন ব্রিজ কোর্সের রেজাল্ট বেরিয়েছিল, সেদিন থেকে নাকি তিনি আসলে এ ক্যাটেগরির টিচার। এয়তাবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তিনি। এখন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্যাটাগরির সত্যিই বদল করা হয় কিনা সেটিই দেখার বিষয়।
Written by Sampriti Bose.